মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩২ অপরাহ্ন
কুয়াকাটা প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রাখাইন তাঁতশিল্প বিভিন্ন সংকটের কবলে পড়েছে। দু:সময় ঘিরে ধরেছে কেরানিপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, কালাচানপাড়া, আমখোলা, বৌলতলীপাড়া, থঞ্জুপাড়া, কেরানীপাড়া, দিয়ার আমখোলাসহ বিভিন্ন পাড়ায়। একসময় তাঁত যন্ত্রে খটখট শব্দে এসব পাড়া মুখর থাকলে এখন সেই সুদিন নেই। দু’একটি তাঁত কারখানা থাকলেও সেগুলো এখন নিবু নিবু করছে সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা আর অর্থসংকটের কারণে।
থঞ্জুপাড়ায় রাখাইন নারী ‘মা চান’ বলেন, একদিকে তাঁতশিল্পীদের অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে অন্যদিকে কাঁচা মালের দামও বেড়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পর্যটকরাও আগের মতো তাঁতের কাপড় ক্রয় করেন না। এ কারণে অনেকেই বিমুখ হচ্ছেন এ পেশা থেকে।
আরেক নারী মামা জানান, আগে এক বান্ডিল সুতা ক্রয় করতাম ৩০০ টাকা দিয়ে সেই সুতা এখন ৫০০ টাকা। নিত্য নতুন ডিজাইনও করতে পারি না প্রশিক্ষণের অভাবে। কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো হরহামেশাই বস্ত্র তৈরি করেন না। বর্তমান অবস্থা বিরাজ করলে তাঁত শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে।
মিস্ত্রিপাড়ার তাঁত শিল্পী তেনোশে (৪৫) আক্ষেপ করে বলেন, এক কেজি সুতায় দুটি গায়ের চাদর বা ৫/৬টি মাফলার অথবা ৩/৪টি তোয়ালে কিংবা দুইটি শার্ট পিস তৈরি করা যায়। একটি চাদর তৈরিতে সময় লাগে ২ দিন। আর জালি চাঁদর তৈরিতে সময় লাগে ১ দিন। নকশী করা একটি মাফলার তৈরিতে দুই দিন আর নকশী ছাড়া করলে একদিন সময় লাগে। একটি তোয়ালে তৈরিতে প্রায় দুই দিন লাগে। প্রকার ভেদে এসব বিক্রিতে তাদের লাভের পরিমাণ ৫০ -৮০ টাকা।
দিয়ার আম খোলা পাড়ার থ্যাংশে বলেন, চাহিদা অনুযায়ী সুতা না পাওয়া, উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, আর্থিক সংকট, আধুনিক মেশিন সংকট, সর্বোপরি সরকারি-বে-সরকারি উদ্যোক্তাদের সহায়তা না পাওয়ার কারণে তাদের ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প সংকটের মুখোমুখি।
বিসিক পটুয়াখালীর সহকারী মহাব্যবস্থাপক কাজী তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন থেকে রাখাইন তাঁতশিল্পে জড়িত কারিগরদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। ডিজাইনসহ ঋণ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আধুনিক যন্ত্র প্রদানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
Leave a Reply